কম্পিউটার রক্ষণাবেক্ষণে সফটওয়্যারের গুরুত্ব | পাঠ্য বই দ্বিতীয় অধ্যায় -( তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি )

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি পাঠ্য বই,বই, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বই, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি,ict book Bangladesh,ict Question Answer,ssc ict,hsc ict..

কম্পিউটার ও কম্পিউটার ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা

class 10,class 9-10, class 11, college, school, nineপাঠক,পাঠ্য বই,বই, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বই, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বাংলাদেশ শিক্ষা বোর্ড,ict book Bangladesh,ict Question Answer, SSC ict Question Answer,hsc ict Question Answer,jsc ICT Question Answer

কম্পিউটার রক্ষণাবেক্ষণে সফটওয়্যারের গুরুত্ব

ঘটনা ১ : রায়না কলেজে ভর্তি হওয়ার পর বাবার কাছে বায়না ধরেছিল একটি ল্যাপটপ কিনে দেবার জন্য । বাবা প্রথম সাময়িকের ফল ভালাে হওয়ায় রায়নাকে একটি কোর আই ফাইভ প্রসেসরযুক্ত একটি ল্যাপটপ কিনে দিলেন। ল্যাপটপ পেয়ে এবং এর গতি দেখে রায়না মুগ্ধ ।

সে কিছুদিনের মধ্যেই অনেক সফটওয়্যার ইনস্টল করে ফেলল। কিন্তু রায়না লক্ষ করল তার ল্যাপটপটি আস্তে আস্তে ধীরগতির হয়ে যাচ্ছে। এক বছরের মাথায় এসে রায়না দেখল তার ল্যাপটপটি এতটাই ধীর হয়ে গেছে যে, কাজ করতে গিয়ে রায়না মহা বিরক্ত। কিছুদিন পর সে বাবাকে আরেকটি ল্যাপটপ কিনে দেওয়ার জন্য আবদার করল।

ঘটনা ২ : অংকন তার কম্পিউটারে ইন্টারনেট কানেকশন নিয়েছে। এখন সে প্রায়ই ইন্টারনেটে বিভিন্ন ওয়েব সাইটে প্রবেশ করে। এতে তার লেখাপড়ার অনেক উপকার হচ্ছে। লেখাপড়া ছাড়াও সে বন্ধুদের ই-মেইল করা, গান শােনা ও ছবি দেখার কাজেও ইন্টারনেট ব্যবহার করে।

ইদানীং সে দেখছে কম্পিউটারটি কোনাে কারণ ছাড়াই মাঝে মধ্যে রিস্টার্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও মাঝে মাঝে অংকনের ইচ্ছা ছাড়াই বিভিন্ন ওয়েব সাইটে ঢুকে যাচ্ছে। একদিন ইউএসবি পাের্টে পেনড্রাইভ প্রবেশ করালে সে অবাক হয়ে দেখল তার সব ফাইল শর্টকাট হয়ে গেছে। মূল ফাইলগুলাে কোথাও দেখা যাচ্ছে না।


উপরের ঘটনা দুটো থেকে তােমরা কী বুঝলে? তােমাদের অনেকের অভিজ্ঞতার সাথে মিলে যাচ্ছে? তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তি সম্পর্কে এতদিনে তােমাদের অনেক কিছুই জানা হয়ে গেছে। তােমরা নিশ্চয়ই বুঝে গেছো তথ্য ও যােগাযােগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে প্রসেসর ও সফটওয়্যার নির্ভর যন্ত্রই হলাে মূল যন্ত্র।

নতুন একটি কম্পিউটার তা ডেস্কটপ, ল্যাপটপ বা ট্যাবলেট যাই হােক না কেন দেখবে খুব ভালাে বা দ্রুতগতিতে কাজ করছে। কিন্তু কিছুদিন ব্যবহার করার পরে দেখবে এটি ক্রমশ ধীরগতির হয়ে যাচ্ছে। অর্থাৎ পুরনাে হলে যন্ত্রটি কেমন যেন ধীর হয়ে যায়। অনেক সময় একটি কমান্ড দিয়ে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়।

মাঝে মাঝে পরিস্থিতি এমন দাঁড়ায় যে, রাগান্বিত হয়ে আরেকটি নতুন কম্পিউটার কিনে ফেলতে ইচ্ছা করে!

এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায় তাহলে কী?

এখানেই রয়েছে কম্পিউটার রক্ষণাবেক্ষণের গুরুত্ব। নিচের শ্রেণিতে তােমরা রক্ষণাবেক্ষণ সম্পর্কে কিছুটা জেনেছ। বেশিরভাগ মানুষেরই আইসিটি যন্ত্রপাতি বা অন্য কোনাে যন্ত্রপাতি রক্ষণাবেক্ষণের কাজটি করতে ভালাে লাগে না। কিন্তু তারপরও এ কাজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

তুমি যদি তােমার আইসিটি যন্ত্র বা কম্পিউটারটি সচল ও পূর্ণমাত্রায় কার্যক্ষম রাখতে চাও তবে অবশ্যই এটির রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। একাজের জন্য তােমার যন্ত্রপাতি বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়ােজন নাই। আসলে আমরা এখানে আইসিটি যন্ত্রপাতির ক্ষেত্রে সফটওয়্যার ভিত্তিক রক্ষণাবেক্ষণের কথা বলছি।

তােমার আইসিটি যন্ত্রটিতে যদি মাইক্রোসফট কোম্পানির উইন্ডােজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করে (বিশ্বের বেশিরভাগ কম্পিউটারে উইন্ডােজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহৃত হয়) থাকে তবে অপারেটিং সিস্টেম সবসময় হালনাগাদ বা আপডেট করতে হবে। ইন্টারনেটে সংযুক্ত থাকলে এ আপডেটগুলাে সাধারণত স্বয়ংক্রিয়ভাবে হয়ে থাকে।

অন্যান্য অপারেটিং সিস্টেমও প্রায় একই ধরনের সুবিধা দিয়ে থাকে। তাছাড়া তােমাকে অবশ্যই মাঝে মাঝে রেজিস্ট্রি ক্লিনআপ সফটওয়্যার ব্যবহার করতে হবে কম্পিউটারকে সচল ও গতিশীল রাখার জন্য। যদি রেজিস্ট্রি ক্লিনআপ ব্যবহার না কর তােমার কম্পিউটার বা আইসিটি যন্ত্রটি ঠিকভাবে কাজ করবে না এবং তােমার জন্য অনেক সময় বিরক্তির কারণ হবে।

এছাড়াও প্রত্যেকবার কম্পিউটার ব্যবহার করার সময় বেশকিছু টেম্পােরারি ফাইল তৈরি হয়। অনেকদিন এ
ফাইলগুলাে না মুছে দিলে হার্ডডিস্কের অনেকটা জায়গা দখল করে রাখে এবং কম্পিউটারের গতিকে ধীর করে দেয়।

সে জন্য আমাদের সবারই উচিত সফটওয়্যারের সাহায্য নিয়ে টেম্পােরারি ফাইলগুলাে মুছে দেওয়া। এতে হার্ডডিস্কের বেশ খানিকটা জায়গা খালি হবে আবার কম্পিউটারের কাজ করার গতিও বেড়ে যাবে অনেক।

ইদানীং ইন্টারনেট ব্যবহার করা ছাড়া আইসিটি যন্ত্রের ব্যবহার কল্পনা করা যায় না। ইন্টারনেট ব্যবহার করলে
তােমার ইন্টারনেট ব্রাউজারের ক্যাশ মেমােরিতে অনেক ককিজ ও টেম্পােরারি ফাইল জমা হয়।

এতে আইসিটি যন্ত্রটি ক্রমান্বয়ে ধীর হয়ে যায়। প্রতিদিন সম্ভব না হলেও কিছুদিন পর পর ক্যাশ মেমােরি পরিষ্কার করা একান্ত প্রয়ােজন। এ কাজটি করতে সফটওয়্যার তােমাকে সাহায্য করবে।

এন্টিভাইরাস, এন্টি পাইওয়্যার ও এন্টি ম্যালওয়্যার ছাড়া বর্তমানে আইসিটি ডিভাইস ব্যবহার করা মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। এধরনের সফটওয়্যার একটি গুরুত্বপূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম যার মাধ্যমে আইসিটি যন্ত্র ব্যবহারকারীগণ তাদের যন্ত্রে ভাইরাসসহ ম্যালওয়্যার বা পাইওয়্যারের আক্রমণ থেকে রক্ষা পান।

পাশাপাশি নির্বিঘ্নে তাদের যন্ত্র বা যন্ত্রগুলাে ব্যবহার করতে পারেন। সবচেয়ে মজার ব্যাপার, এখন অনেক এন্টিভাইরাস এবং এন্টি ম্যালওয়্যার বা এন্টি পাইওয়্যার বিনামূল্যে ইন্টারনেট থেকে ডাউনলােড করে ব্যবহার করা যায়। এমনকি এ সফটওয়্যারগুলাে ইন্টারনেটের মাধ্যমে হালনাগাদও (update) করা যায়। হালনাগাদ এন্টিভাইরাস ছাড়া আইসিটি যন্ত্র ব্যবহার করা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ।

কম্পিউটারের কাজ করার গতি বজায় রাখার জন্য প্রায় সব ব্যবহারকারী ডিস্ক ক্লিনআপ ও ডিস্ক
ডিফ্র্যাগমেন্টার ব্যবহার করে থাকে। এ প্রােগ্রামগুলাে সাধারণত অপারেটিং সিস্টেমের সাথে যুক্ত থাকে। এ
সফটওয়্যার দুটো হার্ডডিস্কের জায়গা খালি করে এবং ফাইলগুলাে এমনভাবে সাজায় যাতে কম্পিউটার গতি
বজায় রেখে কাজ করতে পারে।

Post a Comment

* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.