ইলুমিনাতির প্রাচীন ইতিহাস | ইলুমিনাতি কি?

তখন নবী সুলাইমান আলাইহিস সালামের নবুয়তকাল চলছে। টায়ারের রাজা হিরামের কাছে নবী সুলাইমান আলাইহিস সালাম একটি উপাসনালয় তৈরি করার জন্য সহযােগিতা চাইলেন।

ইলুমিনাতি: প্রাচীন ইতিহাস

তখন নবী সুলাইমান আলাইহিস সালামের নবুয়তকাল চলছে। টায়ারের রাজা হিরামের কাছে নবী সুলাইমান আলাইহিস সালাম একটি উপাসনালয় তৈরি করার জন্য সহযােগিতা চাইলেন। রাজা হিরাম তার পুত্র আবিফ হিরামকে পাঠালেন পয়গম্বর সুলাইমান আলাইহিস সালামের সহযােগিতার জন্য। আবিফ হিরামের নির্মাণ-দক্ষতা ছিল স্বীকৃত।
ইলুমিনাতির প্রাচীন ইতিহাস,ইলুমিনাতি কি,ইলুমিনাতি
তার শৈল্পিক গুণের প্রশংসায় লােকে বলত-স্বর্ণের সাথে রৌপ্য ও লােহা; পাথরের সাথে কাঠ ও রত্ন; গােলাপির সাথে নীল কিংবা কাপড়ের ভাঁজে রেজিনকে গাঁথার কায়দা-পুরাে দুনিয়ায় তারচেয়ে ভালাে কেউ রপ্ত করতে পারে নি। এছাড়া তার প্রতি নিয়ামতস্বরূপ ছিল নবী সুলাইমান আলাইহিস সালামের মাধ্যমে পরােক্ষ ‘ঐশ্বরিক যােগাযােগ-যাকে ম্যাসনরা ‘গুপ্তশক্তি হিসেবে গণ্য করে।

এই গুপ্তশক্তি তিনি দিতে চেয়েছিলেন তার শ্রেষ্ঠ শিষ্যদের। তিনি চাইছিলেন উপাসনাগৃহের নির্মাণকাজ শেষ হলেই তিনি শিষ্যদের এটি শিখিয়ে দেবেন; কিন্তু লােভী তিনজন নির্মাতার অতটা ধৈর্য ছিল না। লােভাতুর এই তিনজন এক সন্ধ্যায় পবিত্র উপাসনাগৃহের দরজা ভেতর থেকে আটকে দেয়। হিরামের কাছে জানতে চায় গুপ্তশক্তির রহস্য।

জবরদস্তির মুখেও হিরাম যখন গুগুমন্ত্র প্রদানে রাজি হচ্ছিল না, তারা তখন হিরামকে আঘাত থাকে; হিরামের একদিনের বিশ্বাসী বন্ধুরাই তাকে উপর্যুপরি আঘাত করতে থাকে—ঘাড়ে,গলায়, বুকে এবং মস্তিস্কে। আঘাতে জর্জরিত হয়ে তিনি আর্তনাদ করতে থাকেন। আঘাতে আঘাতে একসময় তার আর্তনাদ ক্ষীণ হতে হতে শেষ হয় মৃত্যুতে।

তবুওতিনি তার ঐশ্বরিক জাদু ঘৃণ্য আক্রমণকারীদের জানতে দিলেন না। তাদের অসংযত হাতে এই আমানত তুলে দেওয়ার বিপরীতে তিনি বেছে নিলেন পৃথিবী থেকে চিরগমন। সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত নেমে এলাে। হতাশ ও ভীত খুনিরা তার লাশ সােনালি-দরােজা দিয়ে বয়ে নিয়ে গেল মন্দিরের বাইরে। চারদিক দেখে গােপনে লাশ কবর দিয়ে দিল পাশের জঙ্গলাকীর্ণ টিলায়।

এশিয়া-মহাদেশের অন্তর্গত্ত তুরস্কের পশ্চিমে ভূমধ্যসাগরের অন্তর্গত লেভান্ত উপসাগরের পূর্বউপকূলে, ৩৩° ডিগ্রি উত্তর-অক্ষরেখায় টায়ার নগরী অবস্থান। এখন প্রাচীন টায়ারের ভগ্নাবশেষ অবশিষ্ট আছে। তৎকালীন পৃথিবীর মধ্যে সমৃদ্ধিশালী নগর হিসেবে পরিগণিত হতাে টায়ার। প্রথমে টায়ার নগরী তুরস্কের পােলেস্তিন- প্রদেশের) সীমানার মধ্যেই অবস্থিত ছিল।

সকাল হতেই খোঁজ পড়ল হিরামের। বাতাসের গতিতে খবর পৌঁছে গেল নবী সুলাইমান আলাইহিস সালামের কাছে। সংবাদ শুনেই তিনি আঁচ করলেন-কী ঘটে থাকতে পারে। সাতজন সাহসী ও দূরদর্শী ম্যাসনকে তিনি হিরামের লাশ খুঁজতে পাঠালেন। তিন দিকে গেল ছয়জন এবং বাকি একজন রাজার সাথে গেল পূর্বদিকে।

অল্প সময়েই খুঁজে পাওয়া গেল হিরামের লাশ। নিথর হিরামকে উপাসনাপ্রাঙ্গনে পড়ে থাকতে দেখে স্তম্ভিত সুলাইমান আলাইহিস সালামের চোখে অশ্রু নেমে আসে। যে-নকশা তিনি অলৌকিকভাবে পেয়েছিলেন, সেই নকশার নির্মাতা চোখের সামনে শুয়ে আছে; নীরব, নিথর।

শয়তান-পূজার সূচনা:

হিরাম-হত্যার ঘটনায় অনতিবিলম্বে খুঁজে বের করা হলাে খুনি জুবেলা, জুবেলাে এবং জুবেলাসকে। শাস্তিও পেল তারা যথাযােগ্য; কিন্তু এই ঘটনায় ম্যাসনদের মধ্যে লােভের আগুন ছড়িয়ে পড়ল। একদল সুলাইমান আলাইহিস সালামের
উপাসনাগৃহ নির্মাণে ব্যাপৃত রইল সততা ও নিষ্ঠার সাথে। অন্যদলের বুকের ভেতর লকলক করে উঠল লােভ।

তাদের ধারণা হলাে-খােদা যদি শক্তির আধার হন, আর সুলাইমান যদি হােন তার প্রতিনিধি; তাহলে আমরা? আমাদের পরিচয় কী? আমরা যাবাে বিপরীত দিকে। কী বা কে হবে সেই বিপরীত মেরুর লক্ষ্য? সমুচ্চারিত হলাে লুসিফারের নাম। নিশ্চিত করে বলা না গেলেও ঐতিহাসিকদের ধারণা-সেই থেকেই ব্ল্যাক ম্যাজিক বা শয়তানের উপাসনার ধারার সূত্রপাত।

পৃথিবীর সবচেয়ে দক্ষ নির্মাতা, প্রকৌশলী আর ডিপ্লোম্যাটদের একটি দল হয়ে উঠল বিজাতীর সাধক। শুরু হলাে শয়তানের পূজা, স্রষ্টা-বিরােধী ঘৃণ্য এক ষড়যন্ত্রের সূত্রপাত।

পূজারী

সামাজিকভাবে যারা সবচেয়ে উঁচু, যাদের সম্মান প্রায় আকাশছোঁয়া, যাদের শক্তির কোনাে তুলনা নেই, তাদেরকেই বেছে নেওয়া হতাে শয়তানের পূজার জন্য। যেমন-রানি ভিক্টোরিয়া কিংবা স্যার চার্লস ওয়ারেন, তারা যদি হিরাম আবিফের ইতিহাস তুলে বেছে নেয় স্যাটানিক ভার্সেস-খারাপ তাে লাগারই কথা। যদি ড্যান ব্রাউন কিংবা ক্রিস্টোফার নাইট ও রবার্ট লােমাসের মতাে মানুষেরা এই রহস্যের জটের ওপর আলাে না ফেলতেন, তাহলে হয়তাে আমরা একে চিরকাল।

‘ফান' বলেই উপেক্ষা করতাম; কিন্তু একবিংশ শতাব্দী তাে ছুটছে আলাে তথা ডিজিটের ওপর ভর করে। ভেড়ামারার সাধারণ এক কৃষক-সন্তান জ্ঞানী, নাকি কানাডার প্রধানমন্ত্রী-সেটা এখন আর স্লেচ্ছ-ব্রাহ্মণ দিয়ে বিচার হবার নয়। মানুষের দ্বারা আরােপিত সব বর্ডার ভেঙে দিয়েছেন বিল গেটস।

তাে, এখানে যে ম্যাসনদের কথা উঠে এলাে, এদেরকে আবার ফ্রিম্যাসনও বলা হয়ে থাকে। খুব সংক্ষেপে এখানে তাদের সম্পর্কে সামান্য কিছু তথ্য দেবাে। এর প্রয়ােজন ও যথার্থতা সামনে বুঝে আসবে। আশা করছি, এই সামান্য আলােচনা আপনার চিন্তাকে খুব বড়াে একটি ধাক্কা দিতে যাচ্ছে।

Post a Comment

* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.